দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লোকবল সহ দালালদের দৌরাত্ব!

দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লোকবল সহ দালালদের দৌরাত্ব!

 মাহবুবুর রহমান টিপু,দোহার(ঢাকা) প্রতিনিধি:

দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক,লোকবল সংকটসহ রয়েছে দালালদের রোগী বানিজ্যেও অনিয়ম।মাত্র ১৬ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।এসব কারনে ব্যাহত হচ্ছে সরকারের উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান কার্যক্রম। সমকালের অনুসন্ধনীতে এবং হাসপাতাল কতৃপক্ষ সমকালকে চিকিৎসক-লোকবল সংকটের সত্যতা স্বীকার করে বলেন,চিকিৎসক,নার্স,সুইপার সংকটসহ প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের মালিকানাধীন প্রাইভেট ক্লিনিকের দালালদের দৌরাতেœর থাকার কারনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না।

দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লোকবল সহ দালালদের দৌরাত্ব!

সরেজমিনে রোববার ও সোমবার হাসপাতাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দীর্ঘদিন ধরে ৫০ শয্যার হাসপাতাল হিসাবে থাকলেও বাস্তবে ২০ শয্যার জনবলও নেই হাসপাতালটির।২৬টি চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছেন ১৬জন।চোখ,নাক-কান,গলা ও এ্যানেসথেসিয়া ৫জন চিকিৎসক পদশুন্য,৫ জন কনসালটেন্ট সপ্তাহে ২দিন আসে।সরকারী নার্স,আয়া,সুইপার ও নিরাপত্তা কর্মি নেই।চুক্তিভিত্তিক ৫ জন নার্স ও পরিছন্ন কর্মি মাত্র।পুরাতন ভবনটিতে সংস্কারের অভাবে বেশ কয়েক জায়গায় ফাটল ধরেছে। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে ভর্তি রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,প্রতিদিন গড়ে ৫৫ জন রোগী ইনডোরে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন।আর আউটডোরে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন সাড়ে তিনশত।ভর্তি রোগীদের খাবারের পরিবেশ ভালো হলেও হাসপাতালে বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে। হাসপাতালে আল্টাসনোগ্রাম,রক্ত,এক্্ররে ও ইসিজি মেশিন থাকলেও তা পুরাতন হয়ে আছে রোগীর সংখ্যা বেশী থাকলেও অতিরিক্ত বেড না থাকাতে অভাবী রোগীরা শয্যার অভাবে মাঝে-মধ্যে নারী-পুরুষ মেঝেতে পাশাপাশি শুয়ে থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা যায়। প্রতিদিনই জয়পাড়া ও তার আশে-পাশের ক্লিনিক ও রোগ নিরাময় কেন্দ্রের ১০/১২ জন দালাল চক্র জরুরী বিভাগে ঢুকে রোগীকে অন্যত্র উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা দিবে বলে আশ্বাস প্রদান করে দুর-দুরান্ত থেকে আসা রোগীদের প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। সোমবার দুপুরে অটোরিস্ক্রাযোগে অসুস্থ্য এক যুবতী রিতা আক্তার নামে চিকিৎসা সেবা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা।এ সময়ে হাসপাতাল ফটকের সামনে ৮/১০ দালাল চক্র অটোরিস্ক্রাটি ঘিরে ধরে।এক পর্যায়ে রোগীর স্বজনরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি না করিয়ে দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে তারা রোগীকে হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে তাদের পছন্দমত বাহিরের ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করান।এমন ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

 

এসব চক্রের সাথে আলাপকালে তারা বলেন গড়ে প্রতিদিনই ১০/১২ রোগী আমরা পেয়ে থাকি। তা আবার জয়পাড়া ও আশে-পাশের ক্লিনিকগুলিতে আমরা রোগীদের প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করিয়ে থাকি। চক্রটির সদস্যরা সবাই উপজেলার স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়াতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা ও হাসপাতাল কতৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করছেন বলে জানা যায়।তাছাড়া এর আগেও বিষয়টি নিয়ে দোহার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স¦াস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.জসিম উদ্দিন দালালমুক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গড়ে তুলার আহবান জানালে তাতে প্রভাবশালী দালালরা তাকে নাজেহালের চেষ্ঠা চালান। হাসপাতাল কতৃপক্ষ বিষয়টি থানার ওসি মো.সিরাজুল ইসলামকে জানালে কয়েকদিন দালালমুক্ত ছিল বলে জানা যায়। এ বিষয়ে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা:জসিম উদ্দিন সমকালকে দালালদের উৎপাতের সত্যতা স্বীকার করে বলেন,উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসার রাস্তাটির দুপাশে অসংখ্য ঔষের দোকান ও ক্লিনিক গড়ে উঠেছে।যা চিতিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের প্রধান বাধাঁ হয়ে দাড়িয়েছে।আমি চাই আমাদের হাসপাতাল দালাল মুক্ত থাকুক,স্থানীয়রা বিনা খরচে স্বাস্থ্য সেবা পাক এইটা আমাদের কাম্য।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দালালমুক্ত বিষয়ে আমি আপনাদের ও প্রশাসনের সাহায্য চাই।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment